শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

কলকাতা | Swapnamoy Chakraborty: জল আর পানি তো একই, তবু জোর করে এই আরোপ, সেটাই বলতে চেয়েছি : স্বপ্নময়

Riya Patra | ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০ : ০২Riya Patra



হাওয়া অফিস থেকে আকাশবাণী, দীর্ঘ জীবন পথে কর্মসূত্রে যুক্ত থেকেছেন নানা জায়গায়। একই সঙ্গে সমানতালে চলেছে কলম। বরাবর ভেবেছেন নতুন কিছু, যা আগে ভাবা হয়নি সেভাবে। সেই স্বপ্নময় চক্রবর্তী এবার পেলেন সাহিত্য অকাদেমি। "জলের উপর পানি" উপন্যাসের জন্য। উপন্যাসটি ২০১৭–র ১৫ অক্টোবর থেকে ২০২০–র ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১১টি কিস্তিতে ধারাবাহিক ভাবে আজকালের রবিবাসরে প্রকাশিত হওয়ার সময়ই সাড়া জাগিয়েছিল।উপন্যাসের মূল বিষয় দেশভাগ, দেশভাগ পরবর্তী সামাজিক সমস্যা, সংঘাত, উদ্বাস্তু কলোনি, উদ্বাস্তু জীবন। অগণিত শুভেচ্ছা বার্তার মাঝেই সময় বের করলেন লেখক। লেখার ধারা,আগামী লেখা প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বললেন রিয়া পাত্র

প্রশ্ন: ১৯৯২-এর চতুষ্পাঠীর পর ২০১৭-তে লিখছেন জলের উপর পানি, এই দীর্ঘ সময়ে একগুচ্ছ লেখা, ব্যক্তি জীবন, কাজ - দুটো কাহিনি পরম্পরা জুড়তে সমস্যা হয়নি?

স্বপ্নময়: না, তেমনটা হয়নি। কারণ দেশভাগ, দেশভাগ পরবর্তী সামাজিক জীবন, সমস্যা, সমন্বয় এবং সংঘাত, উদ্বাস্তু কলোনি, উদ্বাস্তু জীবন এসবকিছু আমার মাথার মধ্যে ছিল বরাবর। রিফিউজি কলোনি, জনবিন্যাস বদলে যাওয়া, সঙ্গে সঙ্গেই সংস্কৃতির বদল, সবই আমি লক্ষ্য করেছি মন দিয়ে। এর মাঝে অন্যান্য উপন্যাস লিখেছি। তবে খুব বেশি লিখিনি। ২০০৮-০৯ নাগাদ দিশা নামের এক পত্রিকায় ‘অনুপ্রবেশ’ নামে এই বিষয় নিয়ে লিখছিলাম। ১৫-১৬ কিস্তির পর পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় লেখাও। পরবর্তী কালে আজকাল ধারাবাহিক লেখার কথা বলে। হলদে গোলাপ আলাদা স্টাডির লেখা হলেও, সেই সময়েও মাথায় ছিল এই উপন্যাসের ভাবনা। হলদে গোলাপের পরেই আমি ফের ঢুকে পড়ি কলোনি জীবনের তথ্য সংগ্রহের খোঁজে।



প্রশ্ন: আপনার লেখায় বরাবর নতুন ভাবনার সঙ্গেই উঠে আসে বিপুল তথ্য…

স্বপ্নময়: গল্পের ক্ষেত্রে সেটা হয়ে ওঠে না সবসময়। গল্পে একটা বার্তা দিতে চাই আমি। উপন্যাসে দিতে চাই তথ্য। অবশ্যই তারসঙ্গে বার্তা থাকবেই। উপন্যাসের ক্ষেত্রে মনে হয়, জায়গা যখন রয়েছে, সুযোগ রয়েছে ক্যানভাস একটু বড় করার। তাছাড়া নানা বিষয় নিয়ে আমি সচেতনভাবেই ভেবে থাকি, সেটা চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিবর্তন হোক, সুবর্ণ বণিক বা ট্রান্স জেন্ডার। 



প্রশ্ন: জলের উপর পানি-তে যে তথ্য ভান্ডার এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে কাহিনিকে, তার খোঁজ পেলেন কীভাবে?


স্বপ্নময়: যেহেতু আমার মাথায় বরাবর এই বিষয় ছিল, হলদে গোলাপের পর ফের শুরু হয় তথ্য সন্ধান। কলোনির খোঁজ, বয়স্ক মানুষের খোঁজ করে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা। অনেকেই প্রথমে কথা বলতে চান না। একদিন গেলে তো হয় না। বারবার যেতে হবে। রিফিউজি পরিবারে বড় হলেও, দেশভাগের বা উদ্বাস্তু কলোনিতে থাকার অভিজ্ঞতা আমার ছিল না। তথ্যের খোঁজ করতে হয়েছে তাই বেশি। অ্যাকাডেমিক প্যাশনেট ইন্টারেস্ট থেকেই এই লেখার জন্ম। 



প্রশ্ন: আপনার লেখা লক্ষ্য করলে দেখা যাবে শুরুর দিকের লেখায় গ্রাম জীবন ঘুরে ফিরে এসেছে, আবার পরের দিকে এসেছে শহরের বেঁচে থাকা…


স্বপ্নময়: ঠিক তাই। শহরে বেড়ে ওঠা আমি যখন কর্মসূত্রে গ্রামে গিয়েছিলাম, তখন সেই জীবন দেখে আমি আশ্চর্য হয়েছিলাম। গ্রাম বাংলার জীবন আমার শিরা-উপশিরায় ঢুকে গিয়েছিল, লেখাতেও তাই আনতে পেরেছিলাম ভালভাবে। চাকরি বদল হল, সেই জীবন থেকেও সরে এলাম। স্বাভাবিক ভাবেই লেখায় গ্রাম জীবন কমে গেল। পরবর্তীকালের লেখার প্রেক্ষাপটে শহর জীবন থাকলেও, গ্রাম এখনও থেকেই গিয়েছে।



প্রশ্ন: জলের উপর পানি-র কথাতেই ফিরে আসা যাক, লালনের গানের লাইন দিয়ে উপন্যাসের নাম, গূঢ় অর্থেই নামকরণ? 

স্বপ্নময়: ভাবছিলাম কী নাম দেব। ভাবতে ভাবতেই মনে পড়ে গেল এই গান। এই উপন্যাসের নাম যদি ইংরেজিতে অনুবাদ হয়, কী হবে? জলের উপর পানি তো হতে পারবে না। লেয়ারস অফ ওয়াটার হতে পারে। জলের কি স্তর হয়? জল আর পানি তো একই। তবু জোর করে এই আরোপ। সেটাই বলতে চেয়েছি। ধর্ম এবং তার যে অন্তরঙ্গ এবং বহিরঙ্গ, আমরা বহিরঙ্গ নিয়ে বড্ড বেশি ভাবিত। এটা না করলে কিন্তু মিটে যাবে অনেক সমস্যা। সেই বার্তাই দিতে চেয়েছি।



প্রশ্ন: ‘বাজারি কাগজ’ এবং সমান্তরাল সাহিত্য এই দুইয়ের মধ্যে কি সম্পর্ক আঁদায় কাঁচকলায়? লেখক স্বপ্নময়ের কী মত?


স্বপ্নময়: ‘বাজারি কাগজ’ কথাটা ব্যবহার করতে চাই না। তবে ব্যবসায়িক কাগজের মধ্যে তো ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি থাকবেই। দুইয়ের সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায় বলব না, তবে আলাদা ব্যাপার আছে। লেখক হিসেবে বলতে পারি, অনেকেই আছেন যাঁরা কোনওরকম বাজারি কাগজে লেখেননি। আমরা অনেকেই কমার্শিয়াল, নন কমার্শিয়াল দুই জায়গাতেই লিখেছি, যারা লোকে পড়বে কি পড়বে না তোয়াক্কা করে না। অনেক পত্র পত্রিকায় আবার বিতর্ক এড়াতে শব্দ ব্যবহারে নির্দেশিকা দেয়।



প্রশ্ন: এই যে নির্দেশিকা, কোথাও গিয়ে লেখকের ভাবনা-লেখার গতিকে বাধা দেয় না?

স্বপ্নময়: বাধা তো দেয়। অনেক কমার্শিয়াল কাগজে শব্দব্যবহারে ট্যাবু আছে, শ্লীলতা, অশ্লীলতা, ধর্মীয় সহ একাধিক বিষয়ে নির্দেশিকা থাকে। তখন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। অনেক কাগজে বিষয় দেখে সিদ্ধান্ত নিই, লিখবই না সেখানে। একেবারে রাজনৈতিক কাগজও নানা ভাবে এড়িয়ে যাই।


প্রশ্ন: একসময়ে লিটল ম্যাগাজিনে পরপর লেখা, পরে মেন স্ট্রিমে টানা লেখালিখি, সাহিত্যিক স্বপ্নময় স্বচ্ছন্দ কোথায় বেশি? এগিয়ে রাখবেন কোন ধারাকে?
স্বপ্নময়: এরকম বলা যায় না যে, কেউ লিটল ম্যাগাজিনের লেখক। সবার লেখা আলাদা আলাদা। মানিক-তারাশঙ্কর-বিভূতি, তিনজনেই তো মেন স্ট্রিম লেখক। আমাকে কোনও ধারায় বিশেষ ভাবে দাগিয়ে দিলে ঠিক হবে না। তবে প্রথম দিকে আমি লিটল ম্যাগাজিনেই লিখতাম। বড় পত্রিকায় তখন ডাক পড়ত না। লেখকের তৃপ্তির তিনটে জায়গা থাকে। আহ্বান, গ্রহণ, ফিড ব্যাক। কমার্শিয়াল কাগজে নতুন লেখকদের জন্য এই তিনটের একটাও ছিল না। লিটল ম্যাগাজিন নতুনদের এগিয়ে দিতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন: গ্রামের চাকরি থেকে সাহিত্য অকাদেমি প্রাপ্তি, এই জার্নি কেমন ব্যক্তি স্বপ্নময়ের?

স্বপ্নময়: এই জার্নি সংক্ষেপে বলা যায় না। দেশলাই কোম্পানির চাকরি, ভূমিরাজস্ব দপ্তর, হাওয়া অফিস, আকাশবাণী থেকে আইএসআই। কাজ করেছি অনেক জায়গায়। পাশাপাশি লিখে গিয়েছি। লেখাও পরিশ্রমের কাজ। তবে প্রথম থেকে কোনও দিন নিজের টাকায় বই প্রকাশ করিনি। তবে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা কতটা বুঝতে পারি না। সেরকম ভাবে বই বিক্রি হয় না আমার। 

প্রশ্ন: পাঠকের প্রতি লেখকের অভিমান?

 স্বপ্নময়: না না, অভিমান নেই। সব বই বিক্রি হয় না। 



প্রশ্ন: সময়ের থেকে এগিয়ে স্বপ্নময়ের লেখা, তাই কি পাঠক মহলে তুলনায় সমাদর, গ্রহণযোগ্যতা কম?


স্বপ্নময়: না না , গ্রহণযোগ্যতা আলাদা বিষয়। কোনও কোনও বই খুব সাড়া পায়। কোনও কোনও বই বিক্রি হয় না।

প্রশ্ন: লেখক স্বপ্নময়ের থেকে পাঠকেরা পরবর্তীতে আর কী কী লেখা পেতে চলেছেন?
স্বপ্নময়: আমি আরও দুটো- তিনটে উপন্যাস লিখে যেতে চাই। একটা লিখব রেডিও নিয়ে, একটা বিজ্ঞান আন্দোলন নিয়ে লিখব। জলের উপর পানির আর একটা অংশ লেখার ইচ্ছে রয়েছে।




বিশেষ খবর

নানান খবর

শীঘ্রই আসছে...

নানান খবর

ভরা কোটাল থেকে রক্ষা পেল না মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িও, হুড়মুড়িয়ে ধুকল জল...

শুক্রবারেই অবস্থান তুলে নিচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা, শনিবার থেকে চলবে আংশিক কর্মবিরতি...

দায়িত্ব নিয়েই আরজি করে নতুন নগরপাল, বৈঠক করলেন অধ্যক্ষের ঘরে...

কথা বলে ‘ধোঁয়াশা’ কেটেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ডেকরটার্স বিতর্ক নিয়ে জবাব চিকিৎসকদের...

আরজি কর কাণ্ডে ডাক সিবিআই-এর, ‘সবরকম সাহায্য’ করতে সিজিওতে মিনাক্ষী ...

স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণের দাবি, ফের রাজ্যকে ই-মেল, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত ...

রাতের শহরে ফের আক্রান্ত ট্র্যাফিক সার্জেন্ট, চিকিৎসা করাতে নিজেই ছুটে গেলেন হাসপাতালে...

খাস কলকাতায় ফের প্রোমোটারের দাপাদাপি, আহত ১

'যদি কাগজে লেখ নাম', কর্তব্যরত নার্সকে প্রেমপত্র দিয়ে বিপাকে যুবক...

নেতাজি সুভাষ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন, অংশগ্রহণ করল ৯২টি দল...

সোম-রাতে বলেছিলেন মমতা, মঙ্গলে পুলিশের সঙ্গেই বড় বদল স্বাস্থ্যেও ...

কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা, বিনীত হলেন এডিজি এসটিএফ ...

পড়ুয়াদের দক্ষ ও শিল্পমুখী করে তোলার বিশেষ প্রচেষ্টা এসএনইউ’‌র ...

কালীঘাটে মমতার বাড়িতে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে হল বৈঠক, মিলল সমাধান?‌ ...

প্লাবিত এলাকা নিয়ে চিন্তিত মমতা, দিলেন এই নির্দেশ ...

সরকার এবং ডাক্তারদের নিঃশর্ত আলোচনা জরুরি, নয়তো নৈরাজ্যের পথে চলে যাবে পশ্চিমবঙ্গ...

চিকিৎসকদের শর্ত মানল রাজ্য, কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠকে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা...



সোশ্যাল মিডিয়া



12 23